কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি :
আব্দুল আউয়াল (৪০)। চাকরি করেন অ্যাপেক্স লঞ্জারির ডায়িং কারখানায়। গত সোমবার (১১ জানুয়ারি) সকালে বাসাবাড়িতে আগুন লাগলে তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘর থেকে দৌড়ে বের হন। পরে মনে পরে ঘরের ভেতর তার জমানো ৪৫ হাজার ৫৪৩ টাকা রয়ে গেছে। সেই টাকা আনতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। আওয়াল গাইবান্ধার পলাশবাড়ী থানার জগন্নাথপুর গ্রামের উসমান গনির ছেলে।
নিহত আব্দুল আউয়ালের স্ত্রী আকলিমা বেগম আহাজারি করে বলেন, ঘরে আগুন দেখে তিনি ও তার স্বামী আওয়াল, পাঁচ বছরের ছেলে আকাশ ও তিন বছরের প্রতিবন্ধী ছেলে রাকিবকে নিয়ে দৌড়ে ঘর থেকে বাইরে বেড়িয়ে যাই। কিন্তু আমাদের শেষ সম্ভল ৪৫ হাজার ৫৪৩ টাকা আনতে স্বামী আউয়াল আবারও আগুন জ্বলন্ত ঘরের ভিতরে যায়। সে আর ফিরে আসেনি। সেখানেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় আমার স্বামী।
আকলিমা আরো বলেন, এখন মানুষের ঋণের টাকা কিভাবে পরিশোধ করব। আমি কেন পুরে মরে গেলাম না।
এছাড়াও ওই আগুনে ফরহাদসহ আরো তিনজন মারা গেছেন। অপর নিহত ফরহাদের স্ত্রী লিপি বেগম বিলাপের সঙ্গে বলেন, আগুন দেখে তিনি ও তার স্বামী ফরহাদ, তাদের দুই মেয়ে মায়া ও মনিরাকে ঘরের বাইরে বেড়িয়ে যান। কিন্তু দগ্ধ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলা পাশের ভাড়াটে মুন্নিকে উদ্ধার করতে গিয়ে আগুনের লেলিহানে পুড়ে আমার স্বামী ফরহাদও মারা যান।
কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা কবিরুল আলম জানান, ৪ টি লাশ বিভিন্ন ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সবার দেহ একেবারেই পুড়ে গেছে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতার্ (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, নিহতদের লাশ উদ্ধার করে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিআইডি ও পিবিআই এর দুটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত শুরু করেছে।